দুপুর থেকেই অনিন্দিতা খুব ব্যস্ত । আজ বাড়ীতে কিছু বন্ধু আসবে । ঠিক ওর বন্ধু নয় ওর স্বামী অনুপম এর ।
প্রায় ৩ মাস হলো সিঙ্গাপুর এ এসেছে অনিন্দিতা । একটা শেয়ার্ড বাসায় উঠেছে ।এ বাসায় আরো কিছু চাইনিজ থাকে ।
অনিন্দিতা বেশ দ্রুত কাজ করছিল । কারণ রান্না শেষ করে ওকে ঘর গোছাতে হবে তারপর সে গোসল করবে । এটা ওর বাঁধাধরা নিয়ম । ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখাটা একটা বাড়াবাড়ি রকমের পর্যায়ে পৌঁছে গেছে অনিন্দিতার ক্ষেত্রে ।অন্তত অনুপম এর সেরকমই মত । তবে বাড়িতে থাকলে অনুপম অনেক কাজেই ওকে সাহায্য করে । আর কিছু কাজ অনুপম এর জন্য তোলা থাকে ছুটির দিনে করবে বলে । কাপড় ইস্ত্রি আর বাথরুম ধোয়া এটা কখনোই করেনা অনিন্দিতা ।
বন্ধুমহলে রান্নার বেশ সুনাম রয়েছে ওর । তবে এ কৃতিত্বটা যত না অনিন্দিতার তার চেয়ে বেশি অনুপম এর প্রচার এর এমনটা ভাবে মনে মনে অনিন্দিতা । নতুন কিছু রান্না হলে সেগুলোর ছবি আপ করবে অনুপম বা বিভিন্ন জায়গায় কমেন্ট করে বউ এর রান্নার সুনাম করবে । অনিন্দিতা অবশ্য মনে মনে খুশিই হয়, কারণ এটা সত্যি রান্না সে ভালই করে ।
কোনো কিছু হলেই ও রান্না করে সেলিব্রেট করতে চায় । এই যেমন কিছুদিন আগে ওরা একটা DSLR ক্যামেরা কিনলো ।ঐদিন অনেক কিছু রান্না করলো অনিন্দিতা । আর অনুপম নতুন ক্যামেরা দিয়ে ওর ছবি তুলল বেশকিছু রান্নাঘরেই ।
অনুপম এর ছবি তোলার সখ আছে । অনুপম এর বাবার ও আছে এই শখ । অনিন্দিতা শুনেছে ছোটবেলায় অনুপমকে ওর বাবা মাঝে মাঝে একটা পুরো ফিল্ম কিনে দিত ছবি তোলবার জন্য ।
আজ খিচুড়ী রান্না করছে অনিন্দিতা । হঠাৎ ওর তেতুল খেতে ইচ্ছা হলো । ও যখন রান্নার টেনশন এ থাকে তখন খেতে পারেনা । তাই ভাবলো একটু তেঁতুল খাবে । ফ্রিজ থেকে বের করলো তেঁতুল এর প্যাকেট । জমে একেবারে যেন পাথর হয়ে আছে । ও একটা ছুরি নিয়ে এক হাতে তেঁতুল এর চাকা টা ধরে অন্য হাতে ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে কিছুটা তেঁতুল কেটে বের করতে গিয়ে হাত ফসকে সোজা অন্য হাতে ঢুকে গেল ছুরি ।
প্রচন্ড ব্যাথায় ও বসে পড়েছে ততক্ষণ । রান্নাঘর থেকে দৌড়ে ঘরে চলে গেল । ঘরে যেয়ে অনুপম কে ফোন করবে বলে ফোন টা তুলেছে কিন্তু কি ভেবে যেন আবার রেখে দিল ।
ও কথোপকথন টা কল্পনা করে নিল । শুনে প্রথমেই অনুপম বলবে এন্টিসেপটিক লাগাও । একটু অপেক্ষা কর দেখো রক্ত পড়া বন্ধ হয় কিনা । আর তাছাড়া এত ছোট কারণে ও কিভাবেই বা অফিস থেকে আসবে । অনুপম একটু এরকমই । ভীষণ প্রাকটিক্যাল । অন্য ছেলেদের মত ন্যাকা ন্যাকা ভাব দেখায়না বউ এর প্রতি । অনিন্দিতা জানে কিন্তু তারপর ও মনের কোনায় কোথায় যেন একটু অভিমান জমে রইলো ।
আবার নিজের হাতের দিকে তাকালো । হাতটা মুহুর্তে ফুলে গেছে আর কাটা জায়গার চারপাশ জুড়ে রক্ত জমে গেছে । তীব্র যন্ত্রনাটাও কমছেনা ।ও কি করবে বুঝতে পারছেনা । পাশের ঘরে জেস নামের একটা চাইনিজ মেয়ে থাকে ওকে ডাকলো । জেস স্যাভলন আর তুলো দিয়ে মোটামুটি রকমের একটা ব্যান্ডেজ করে দিল । এখন হাতটা এত অবশ যে ও আর কোনো ব্যাথা অনুভব করছেনা । ও রান্নাঘরে ফিরে গেল । কাজ শেষ করতে হবে ওকে । কোনরকমে রান্না শেষ করে গোসল করে নিল ।
অবশ ভাবটা কেটে যাওয়ার পর ব্যথাটা আবার ফিরে এসেছে । ফোলাটাও যেন বেড়ে গেছে অনেকগুণ । আর কাটা জায়গা থেকে কেমন যেন সাদা মাংশ বেরিয়ে এসেছে । এবার ও ফোন করলো অনুপমকে । অনুপম শুনে বলল নিচে ডাক্তার এর কাছে যেতে । কিন্তু অনিন্দিতা ব্যাগ খুলে দেখল টাকা নেই । এরকম কখনো হয়নি । অনুপম কখনো ওকে টাকা দিয়ে যেতে ভোলেনা । অনিন্দিতা ঘুমিয়ে থাকলেও ওকে ডেকে বলে যায় যে টাকা থাকলো । এটা অনুপম এর অভ্যাস । দোষটা অনিন্দিতার ই । ও কখনো নিজের ব্যাগ খুলে দেখেনা যে টাকা আছে কিনা । আসলে টাকা ওভাবে ঠিক লাগেওনা । বাইরে গেলে অনুপম সবসময় সাথেই থাকে । ও আবার ফোন করলো অনুপম কে ।
কিছুক্ষণ পরে অনুপম চলে আসল অফিস থেকে । একজন জিপি কে দেখিয়ে হাত টা ব্যান্ডেজ করতে হলো । কম্পাস হাইট এর নিচে থেকে ডাক্তার দেখিয়ে ওরা যখন ফিরছিল অনুপম ওকে একহাতে জড়িয়ে ধরে রেখেছিল । অনিন্দিতার তখন নিজেকে ভীষণ অপরাধী মনে হচ্ছিল । এই মানুষটার উপরে মিছেই অভিমান করে ও ।
প্রায় ৩ মাস হলো সিঙ্গাপুর এ এসেছে অনিন্দিতা । একটা শেয়ার্ড বাসায় উঠেছে ।এ বাসায় আরো কিছু চাইনিজ থাকে ।
অনিন্দিতা বেশ দ্রুত কাজ করছিল । কারণ রান্না শেষ করে ওকে ঘর গোছাতে হবে তারপর সে গোসল করবে । এটা ওর বাঁধাধরা নিয়ম । ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখাটা একটা বাড়াবাড়ি রকমের পর্যায়ে পৌঁছে গেছে অনিন্দিতার ক্ষেত্রে ।অন্তত অনুপম এর সেরকমই মত । তবে বাড়িতে থাকলে অনুপম অনেক কাজেই ওকে সাহায্য করে । আর কিছু কাজ অনুপম এর জন্য তোলা থাকে ছুটির দিনে করবে বলে । কাপড় ইস্ত্রি আর বাথরুম ধোয়া এটা কখনোই করেনা অনিন্দিতা ।
বন্ধুমহলে রান্নার বেশ সুনাম রয়েছে ওর । তবে এ কৃতিত্বটা যত না অনিন্দিতার তার চেয়ে বেশি অনুপম এর প্রচার এর এমনটা ভাবে মনে মনে অনিন্দিতা । নতুন কিছু রান্না হলে সেগুলোর ছবি আপ করবে অনুপম বা বিভিন্ন জায়গায় কমেন্ট করে বউ এর রান্নার সুনাম করবে । অনিন্দিতা অবশ্য মনে মনে খুশিই হয়, কারণ এটা সত্যি রান্না সে ভালই করে ।
কোনো কিছু হলেই ও রান্না করে সেলিব্রেট করতে চায় । এই যেমন কিছুদিন আগে ওরা একটা DSLR ক্যামেরা কিনলো ।ঐদিন অনেক কিছু রান্না করলো অনিন্দিতা । আর অনুপম নতুন ক্যামেরা দিয়ে ওর ছবি তুলল বেশকিছু রান্নাঘরেই ।
অনুপম এর ছবি তোলার সখ আছে । অনুপম এর বাবার ও আছে এই শখ । অনিন্দিতা শুনেছে ছোটবেলায় অনুপমকে ওর বাবা মাঝে মাঝে একটা পুরো ফিল্ম কিনে দিত ছবি তোলবার জন্য ।
আজ খিচুড়ী রান্না করছে অনিন্দিতা । হঠাৎ ওর তেতুল খেতে ইচ্ছা হলো । ও যখন রান্নার টেনশন এ থাকে তখন খেতে পারেনা । তাই ভাবলো একটু তেঁতুল খাবে । ফ্রিজ থেকে বের করলো তেঁতুল এর প্যাকেট । জমে একেবারে যেন পাথর হয়ে আছে । ও একটা ছুরি নিয়ে এক হাতে তেঁতুল এর চাকা টা ধরে অন্য হাতে ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে কিছুটা তেঁতুল কেটে বের করতে গিয়ে হাত ফসকে সোজা অন্য হাতে ঢুকে গেল ছুরি ।
প্রচন্ড ব্যাথায় ও বসে পড়েছে ততক্ষণ । রান্নাঘর থেকে দৌড়ে ঘরে চলে গেল । ঘরে যেয়ে অনুপম কে ফোন করবে বলে ফোন টা তুলেছে কিন্তু কি ভেবে যেন আবার রেখে দিল ।
ও কথোপকথন টা কল্পনা করে নিল । শুনে প্রথমেই অনুপম বলবে এন্টিসেপটিক লাগাও । একটু অপেক্ষা কর দেখো রক্ত পড়া বন্ধ হয় কিনা । আর তাছাড়া এত ছোট কারণে ও কিভাবেই বা অফিস থেকে আসবে । অনুপম একটু এরকমই । ভীষণ প্রাকটিক্যাল । অন্য ছেলেদের মত ন্যাকা ন্যাকা ভাব দেখায়না বউ এর প্রতি । অনিন্দিতা জানে কিন্তু তারপর ও মনের কোনায় কোথায় যেন একটু অভিমান জমে রইলো ।
আবার নিজের হাতের দিকে তাকালো । হাতটা মুহুর্তে ফুলে গেছে আর কাটা জায়গার চারপাশ জুড়ে রক্ত জমে গেছে । তীব্র যন্ত্রনাটাও কমছেনা ।ও কি করবে বুঝতে পারছেনা । পাশের ঘরে জেস নামের একটা চাইনিজ মেয়ে থাকে ওকে ডাকলো । জেস স্যাভলন আর তুলো দিয়ে মোটামুটি রকমের একটা ব্যান্ডেজ করে দিল । এখন হাতটা এত অবশ যে ও আর কোনো ব্যাথা অনুভব করছেনা । ও রান্নাঘরে ফিরে গেল । কাজ শেষ করতে হবে ওকে । কোনরকমে রান্না শেষ করে গোসল করে নিল ।
অবশ ভাবটা কেটে যাওয়ার পর ব্যথাটা আবার ফিরে এসেছে । ফোলাটাও যেন বেড়ে গেছে অনেকগুণ । আর কাটা জায়গা থেকে কেমন যেন সাদা মাংশ বেরিয়ে এসেছে । এবার ও ফোন করলো অনুপমকে । অনুপম শুনে বলল নিচে ডাক্তার এর কাছে যেতে । কিন্তু অনিন্দিতা ব্যাগ খুলে দেখল টাকা নেই । এরকম কখনো হয়নি । অনুপম কখনো ওকে টাকা দিয়ে যেতে ভোলেনা । অনিন্দিতা ঘুমিয়ে থাকলেও ওকে ডেকে বলে যায় যে টাকা থাকলো । এটা অনুপম এর অভ্যাস । দোষটা অনিন্দিতার ই । ও কখনো নিজের ব্যাগ খুলে দেখেনা যে টাকা আছে কিনা । আসলে টাকা ওভাবে ঠিক লাগেওনা । বাইরে গেলে অনুপম সবসময় সাথেই থাকে । ও আবার ফোন করলো অনুপম কে ।
কিছুক্ষণ পরে অনুপম চলে আসল অফিস থেকে । একজন জিপি কে দেখিয়ে হাত টা ব্যান্ডেজ করতে হলো । কম্পাস হাইট এর নিচে থেকে ডাক্তার দেখিয়ে ওরা যখন ফিরছিল অনুপম ওকে একহাতে জড়িয়ে ধরে রেখেছিল । অনিন্দিতার তখন নিজেকে ভীষণ অপরাধী মনে হচ্ছিল । এই মানুষটার উপরে মিছেই অভিমান করে ও ।
No comments:
Post a Comment