Saturday, 22 December 2012

স্মরণ

জীবন সবসময় পরিকল্পনা মাফিক চলেনা সেটা রমি প্রতি মুহুর্তে নিজের জীবন দিয়ে বুঝতে পারছে । তারপর ও সে স্বপ্ন দেখে । অবাস্তব কল্পনা করে ।গতকাল সে নিতান্ত প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্র গুছিয়ে নিয়েছে । আর যত্ন করে গুছিয়ে নিয়েছে সমস্ত স্মৃতি । দীর্ঘ আট বছরের সংসার ছেড়ে ওকে চলে যেতে হচ্ছে । আবার যেন সেই হল লাইফ এর শুরু । শুধু দেশটা ভিন্ন । ও যার জন্য এই ভিনদেশে এসেছিল একগাদা স্বপ্ন চোখে নিয়ে সে আজ আর ওর  সাথে নেই । তাই স্বপ্নগুলো ও একাই বহন করে নিয়ে চলেছে । যদিও সেগুলো পূরণ করা আর সম্ভব নয় ।
বারান্দা থেকে windchimes গুলো সযত্নে খুলে নিল রমি । জিনিসপত্র গোছাবার এই পুরো সময়টা ওকে মানসিকভাবে  প্রচন্ড সহযোগিতা করেছে স্যালি, ওর ফ্ল্যাটমেট । নতুন যে বাসায় ও উঠবে, তাদের সাথে ও আগেই কথা বলে রেখেছিল । ওরা বলেছে বারান্দায় windchimes গুলো ঝোলাতে দেবে । সফটটয় গুলোকেও নিয়েছে সাথে । একবার ভেবেছিল বেবি pooh টা ছাড়া বাকি টয়  গুলো আরিশ কে দিয়ে দেবে । পরে মনে হলো  এগুলোর সাথে ওর জীবনের সবচেয়ে সুন্দর স্বপ্ন আর স্মৃতি জড়িত । তাই যতদিন পারবে ও এগুলো কে বয়ে নিয়ে বেড়াবে । ওরা দুজনে অনেক খেলত baby pooh কে নিয়ে । আর নিয়েছে একটা ফুলদানী, অনুপমের দেওয়া উপহার । লাল ১০ টা টিউলিপ সহ ওই ফুলদানী টা রমিকে দিয়েছিল অনুপম । অষ্টম বিবাহবার্ষিকীতে ।

রমি ঠিক করেছে এখন থেকে যতদিন বেঁচে থাকবে প্রত্যেক ১১ ই এপ্রিল এ লাল ১০ টা টিউলিপ  কিনে এনে ওই ফুলদানীতে সাজাবে । প্রত্যেক ২২ শে অক্টোবর windchimes গুলোর সামনে দাঁড়িয়ে দেখবে তার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর জন্মদিনের উপহার । প্রত্যেক ৬ জুলাই কেক কিনে আনবে, মোমবাতি জ্বালবে, রান্না করবে। যদিও কেউ অফিস থেকে ফিরে ঘরে ঢুকেই বিরানির গন্ধে খুশি হয়ে উঠবেনা । আর প্রত্যেকটা বিশেষ দিনে বা অবিশেষ দিনে  অনুপম কে উদ্দেশ্য করে লিখবে চিঠি । ওই চিঠি পড়ার কেউ থাকবেনা সে জানে । তবুও লিখবে ।

No comments:

Post a Comment