মধ্যরাত্রি
আনন্দ হাসিতামাশা পানাহার
শেষে বন্ধুরা ফিরে গেছে যে যার ডেরায়
স্টেশনে শেষ ট্রেনের
অপেক্ষায় আমি
ট্রেন আসবে, ঠিক সময়মত ঘড়ির
কাঁটা মিলিয়ে
আমাকে নিয়ে যাবে, নামিয়েও
দেবে ঠিক তিনটে ষ্টেশন পরে
কিন্তু আমি গন্তব্যে
পৌঁছবনা কারণ আমার কোন গন্তব্য নেই
আমি ক্লান্ত পায়ে হাঁটতে
হাঁটতে চেনা রাস্তা ধরে রোবটের মত যেতে থাকব
পথ চিনতে আমার কোন ভুল
হবেনা
আমি হাঁটব অঙ্ক কষে কষে
বাম থেকে ডানে, তারপর
কিছুটা সোজা হেঁটে আবার বামে
পথে হয়ত দেখা হয়ে যাবে
আমারই মত গন্তব্যহীন কোন এক পাঁড় মাতাল এর সাথে
তার খিস্তি খেউড় কে
অগ্রাহ্য করে আমি হাঁটতে থাকব, এমনভাবে
যেন কেউ আমার জন্য অপেক্ষায়
আছে
যেন ঘরে ফিরলেই কেউ আমাকে
আগলে নেবে তার দুবাহুতে
আমার বাম চোখের কোণে--
ভুরুর ঠিক উপরে, ঠিক ওইখানে যেখানে মায়েরা নজরফোঁটা দিয়ে রাখে--
একটা অভিমানভরা আলতো চুম্বন
দিয়ে বলবে “এত দেরি ? আমি কখন থেকে বসে আছি”
আমি সেই তার কাছে নিজেকে
সমর্পণের নেশায় আরও দ্রুতগতিতে হাঁটতে থাকব
তারপর বড় রাস্তা পেরিয়ে আমি
একটা ফুলের গন্ধভরা গলিতে ঢুকে যাব
মহুয়া, গন্ধরাজ আর
হাস্নাহেনার গন্ধে আমি কিছুক্ষণ ঝিম মেরে থাকব
তারপর আবার হাঁটতে থাকব এবড়োখেবড়ো
গলিটা ধরে
এরই মধ্যে ব্যাগ থেকে বের
করে নেব ঘরের চাবি
আমি প্রায় পৌঁছে গেছি
আমি দরজা খুলব সন্তর্পণে,
যেন প্রতিবেশীরা না জাগে
আমি একটা অন্ধকার ঘরে ঢুকব
হাতের পাশেই আলো জ্বালবার
সুইচ থাকবে কিন্তু আমি আলো জ্বালবোনা
শুন্য ঘরের নির্মম
বাস্তবতাকে দুচোখ দিয়ে দেখব
কিন্তু আমার চোখ দিয়ে
একফোঁটাও অশ্রু ঝরবেনা
এমনকি আমি কোন দীর্ঘশ্বাস ও
ফেলবোনা
এভাবেই প্রতিদিন আমি ঘরে
ফিরব কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছবনা
কারণ আমার কোন গন্তব্য নেই
...
No comments:
Post a Comment